আফগানিস্তানে আবারও মিসাইল হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। শুক্রবার রাতে কুনার প্রদেশের সরকানি জেলায় এই হামলা চালায় পাকিস্তান সামরিক বাহিনী। এই হামলার নিন্দা জানিয়ে পরিণতি ভোগ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে আফগানিস্তান।
পাকিস্তানি হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে আফগান সংবাদ মাধ্যম তোলো নিউজ ও খামা প্রেস। পাকিস্তানি মিসাইল হামলায় মাটির সঙ্গে মিশে গেছে বহু বাড়িঘর। অনেক আফগান নাগরিক বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। অন্যদিকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজএক্স জানায়, হামলায় আফগান সীমান্তরক্ষী বাহিনীর এক সদস্য মারা গেছেন।
পাকিস্তানের বর্বর হামলা ঠেকানোর জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন আফগানিস্তানের সাধারণ নাগরিক। কুনার প্রদেশের স্থানীয় বাসিন্দা মাহজাবুল্লাহ মাহজাব বলেন, পাকিস্তানের রকেট হামলার সাধারণ মানুষ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এদিকে হামলার পর বিবৃতি দিয়েছে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিবৃতিতে ইসলামাবাদ জানায়, তেহরিক-ই-তালেবান, টিটিপির ওপর হামলা করা হয়েছে। এতে বহু সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে।
অন্যদিকে পাকিস্তানের এই মিসাইল হামলার পর কড়া ভাষায় প্রতিবাদ জানিয়েছে কাবুল। আফগান সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, এই ধরনের হামলা দুই দেশের সম্পর্ক নষ্ট করবে।
হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ আরও বলেন, হামলায় মানুষের পাশাপাশি অনেক গবাদি পশু মারা গেছে। তিনি ভবিষ্যতে এই ধরনের হামলা থেকে বিরত থাকার জন্য পাকিস্তানকে আহ্বান জানান।
তোলো নিউজ ও খামা প্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তান এমন সময় এই হামলা চালালো, যখন ৪৬ আফগান নাগরিক নিহতের ঘটনায় কাবুল ও ইসলামাবাদের মধ্যে সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে।
গেলো ২৫ ডিসেম্বর আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে বিমান হামলা চালায় পাকিস্তান। এই হামলায় মারা যায় ৪৬ আফগান নাগরিক। নিহতের মধ্যে নারী ও শিশুসহ একই পরিবারের ১৮ সদস্য ছিলো।
এই হামলাকে স্পষ্ট আগ্রাসন বলে অভিহিত করেছে আফগানিস্তান। অন্যদিকে পাকিস্তানের অভিযোগ, আফগান সরকার সশস্ত্র গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালেবান, টিটিপিকে আশ্রয় প্রশয় দিচ্ছে। তবে পাকিস্তানের এই দাবি বরাবেই নাকচ করে শান্তিপুর্ণ উপায়ে সমস্যা সমাধানের দাবি জানিয়েছে কাবুল।
তেহরিক-ই-তালেবান, টিটিপি পাকিস্তানি তালেবান নামে পরিচিত। সংগঠনটি আদর্শগতভাবে আফগান তালেবানের অনুসারী। পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে ইসলামী শরীয়া আইন চালুর জন্য লড়াই করছে টিটিপি।
এনএস/