আন্তর্জাতিক

লিবিয়ায় মিলিশিয়া প্রধান হত্যার পর ব্যাপক গুলিবর্ষণ ও সংঘর্ষ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ছবি: সংগৃহীত

লিবিয়ার আবারও ছড়িয়ে পড়েছে রক্তক্ষয়ী সহিংসতা। রাজধানী ত্রীপলিতে মিলিশিয়া নেতা আবদেল ঘানি আল-কিকলি হত্যাকাণ্ডের পর শহরের দক্ষিণাঞ্চলে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে প্রচণ্ড সংঘর্ষ শুরু হয়। গোলাগুলির আওয়াজে কেঁপে ওঠে একাধিক এলাকা। পরিস্থিতি সামাল দিতে কর্তৃপক্ষ জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। খবর আলজাজিরা

স্থানীয় সূত্র জানায়, সোমবার (১২ মে) রাত থেকে শহরের বিভিন্ন অংশে ভারী অস্ত্রের গুলির শব্দ ও বিস্ফোরণের প্রতিধ্বনি শোনা যায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, শহরের আকাশে কালো ধোঁয়া, মিলিশিয়া বাহিনীর বহর, ও রাস্তা জুড়ে উত্তেজনা।

আল-কিকলি, যিনি 'ঘেনিওয়া' নামে পরিচিত, ছিলেন প্রেসিডেনশিয়াল কাউন্সিলের অধীনস্থ 'স্ট্যাবিলিটি সাপোর্ট অথরিটি' (এসএসএ)–এর প্রধান। তাকে ত্রিপলির অন্যতম প্রভাবশালী ও ক্ষমতাধর মিলিশিয়া নেতাদের একজন হিসেবে বিবেচনা করা হতো। সম্প্রতি তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী একটি গোষ্ঠীর সঙ্গে উত্তেজনায় জড়ান, যার জেরেই এই প্রাণঘাতী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে মনে করা হচ্ছে।

জাতিসংঘের লিবিয়া মিশন (ইউএনএসএমআইএল) এক বিবৃতিতে জানায়, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এমন সহিংসতা গভীর উদ্বেগের বিষয়। তারা সব পক্ষকে অবিলম্বে সংঘর্ষ থামানোর আহ্বান জানিয়েছে এবং বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের তাগিদ দিয়েছে। একইসঙ্গে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যস্থতার চেষ্টাকে সমর্থন জানানো হয়েছে।

লিবিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জনগণকে ঘরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে এবং অপ্রয়োজনীয় চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে রাজধানীর সব স্কুল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একদিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

ত্রিপলির কিছু এলাকায় সরকারি বাহিনী নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বলে জানানো হলেও পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আছে কি না, তা স্পষ্ট নয়। ত্রিপলির দিকে মিসরাতা, আজ-জাওয়িয়া ও জিনতান থেকে সশস্ত্র বাহিনীর প্রবেশের খবর পাওয়া গেছে, যা ভবিষ্যতে আরও বড় সংঘর্ষের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, প্রতিবার এই সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘর্ষে সাধারণ নাগরিকরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হন। কেউ দায়িত্ব নেয় না। স্থানীয়রা বিচার চায় এবং দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে চায়।

প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের পর থেকে লিবিয়া রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সহিংসতায় জর্জরিত। এরপর থেকে তেলসমৃদ্ধ এই দেশটি পূর্ব ও পশ্চিমে বিভক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী সরকার দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছে, যাদের প্রত্যেকের পেছনে রয়েছে বিভিন্ন মিলিশিয়া গোষ্ঠী ও বৈদেশিক মদদ।

 

এমএ//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন লিবিয়া | সংঘর্ষ