লাইফস্টাইল

ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে প্রাকৃতিক গ্লুটাথিয়োন

লাইফস্টাইল

ছবি: সংগৃহীত

বর্তমানে ত্বকের সমস্যার পেছনে অনেক কারণ রয়েছে অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া, রাতে ঘুমানোর অভাব, মদ্যপান, দূষণ ও তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণ।  এই সমস্ত কারণে ত্বকে ব্রণ, বলিরেখা, ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া কিংবা অকালে বুড়িয়ে যাওয়া সব কিছুই দেখা যায়।  তবে এমন একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট আছে যা ত্বককে আগের মতোই প্রাণবন্ত এবং উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করতে পারে এটি হল গ্লুটাথিয়োন।

গ্লুটাথিয়োন এক ধরনের প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, যা শরীরের কোষেই তৈরি হয়।  এই অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টের কাজ হল শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করা এবং ত্বকে তারুণ্যের দীপ্তি ধরে রাখা।  গ্লুটাথিয়োন শরীরে তিনটি অ্যামাইনো অ্যাসিড—গ্লাইসিন, গ্লুটামিক এবং সিস্টাইন অ্যাসিড এর মিশ্রণ হিসেবে তৈরি হয়। 

ত্বকে তারুণ্য ফিরিয়ে আনতে গ্লুটাথিয়োনের ভূমিকা

ত্বকে তারুণ্য এবং উজ্জ্বলতা বজায় রাখতে গ্লুটাথিয়োন একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।  এটি ত্বকে মেলানিন রঞ্জক তৈরি হওয়া নিয়ন্ত্রণ করে, যা ত্বকের রং নির্ধারণে সাহায্য করে।  মেলানিনের অতিরিক্ত উৎপাদন ত্বকে কালচে ছোপ এবং দাগ তৈরি করতে পারে।  গ্লুটাথিয়োন মেলানিনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।  ফলে ত্বকে কালচে দাগ বা বলিরেখা পড়া কমে যায়।

অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার কারণে গ্লুটাথিয়োনের মাত্রা কমে যায়, যার ফলে ত্বকে নানা সমস্যা দেখা দেয়।  বিশেষ করে রাত জেগে কাজ করা, অতিরিক্ত মদ্যপান বা খাদ্যাভ্যাসের কারণে ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, বলিরেখা পড়তে পারে ও ত্বকের ঔজ্জ্বল্য কমে যেতে পারে।  তবে সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এনে এই অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টের মাত্রা বৃদ্ধি করা সম্ভব।

প্রাকৃতিক খাবার থেকেই গ্লুটাথিয়োনের মাত্রা বাড়ানো সম্ভব।  সৌন্দর্যচর্চায় প্রয়োগ করা সাপ্লিমেন্ট বা ইঞ্জেকশনের পাশাপাশি কিছু বিশেষ খাবারও ত্বকে গ্লুটাথিয়োনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।

এখানে কিছু খাবারের তালিকা দেওয়া হলো, যা ত্বকের জন্য উপকারী:

১. ব্রকোলি

ব্রকোলি ভিটামিন এবং খনিজে ভরপুর, যা গ্লুটাথিয়োনের উৎপাদন বাড়ায়। তবে, স্যালাড বা সেদ্ধ ব্রকোলি খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়, কারণ অতিরিক্ত মশলা দিয়ে রান্না করলে গ্লুটাথিয়োনের উপকারিতা কমে যেতে পারে। 

২. পালংশাক

পালংশাকে রয়েছে ভিটামিন সি, ই এবং বিটা-ক্যারোটিন, যা গ্লুটাথিয়োনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।  স্যালাড বা স্মুদি হিসেবে এটি খাওয়া গেলে উপকার বেশি হবে।

৩. রসুন

যদিও রসুনে সরাসরি গ্লুটাথিয়োন নেই, তবে এতে থাকা সালফার উপাদান গ্লুটাথিয়োন তৈরিতে সাহায্য করে।  রসুন ত্বকের জন্যও অত্যন্ত উপকারী। 

গ্লুটাথিয়োন ড্রিঙ্ক: ত্বকের জন্য এক শক্তিশালী পানীয়।  তবে শুধু খাবারের মাধ্যমে গ্লুটাথিয়োন বাড়ানোর পাশাপাশি গ্লুটাথিয়োন ড্রিঙ্ক বানিয়ে খেতে পারেন, যা ত্বক ও স্বাস্থ্য উভয়ই উপকারে আসবে।

গ্লুটাথিয়োন ড্রিঙ্ক তৈরি করার উপায় :

১. কুচিয়ে নেওয়া বিট, গাজর, পেঁপে, বেদানা এবং পালংশাক নিয়ে একটি বড় কাচের জারে রাখুন।

২. সমস্ত উপকরণ ব্লেন্ডারে ভালো করে পিষে নিয়ে রস ছেঁকে নিন।

৩. এর মধ্যে একটু পাতিলেবুর রস মিশিয়ে প্রতিদিন এই রস খান।

এই রসটি লিভারের স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো এবং গ্লুটাথিয়োনের উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে, যা ত্বক এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।

ত্বকের তারুণ্য ও সৌন্দর্য ধরে রাখতে গ্লুটাথিয়োন একটি অপরিহার্য উপাদান।  এটি প্রাকৃতিকভাবে শরীরে তৈরি হলেও, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা এর মাত্রা কমিয়ে দেয়।  সঠিক খাবারের মাধ্যমে এবং জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এনে এই অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টের পরিমাণ বাড়ানো সম্ভব, যা ত্বককে সতেজ, উজ্জ্বল এবং তারুণ্যপূর্ণ রাখতে সহায়তা করবে।

এসকে// 

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন ত্বক | অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া