বাংলাদেশ
দায়িত্বজ্ঞানহীন কেউ যেন ক্ষমতায় না আসে : প্রধানমন্ত্রী
Published
2 years agoon
By
বিপ্লব আহসান১৯৯১ সালের প্রলয়ঙ্করী ঘুর্ণিঝড়ের পর যে দলটির প্রধান বলেছিলেন, যত লোক মারা যাওয়ার কথা ছিলো তত লোক মারা যায় নাই। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের মতো দায়িত্বজ্ঞানহীন কেউ যেন আগামীতে ক্ষমতায় না আসে সেজন্য সতর্ক থাকুন। বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ বৃহস্পতিবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস-২০২২ উপলক্ষ্যে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ৫০টি মুজিব কেল্লা, ৮০টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র ও ২৫টি জেলা ত্রাণ গুদাম-কাম-দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তথ্য কেন্দ্রেরও উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আবার ঐরকম কেউ যেন ক্ষমতায় না আসে যে, যত মানুষ মারা যাওয়ার কথা ছিল তত মানুষ মরে নাই বলে দায় দায়িত্বহীনতার পরিচয় কেউ যেন না দেয় ভবিষ্যতে, সেজন্যও দেশবাসীকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, ৯১ সালে খালেদা জিয়া যখন ক্ষমতায়, তখন দেশে এক প্রলয়ঙ্করী ঘূর্নিঝড় হল। সেই ঘূর্নিঝড়ের পর সংসদে দাঁড়িয়ে খালেদা জিয়া বলেছিলেন, যত মানুষ মরার কথা ছিল তত মানুষ মরে নাই। আমি তখন তার কাছে জানতে চেয়েছিলাম, আর কত মানুষ মারা গেলে আপনার মনে হবে যে তত মানুষ মারা গেছে?
তিনি বলেন, ৯১-এর ওই দূর্যোগে শুধুমাত্র তৎকালীন বিএনপি সরকারের দায়িত্বে অবহেলার কারণে বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটেছিল। দেশের মানুষ যে মরছে সেদিকে তাদের কোনো ভ্রুক্ষেপই ছিল না। অথচ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল প্রায় দেড় লাখ মানুষের মৃত্যু এবং ঘর-বাড়ি, গবাদি-পশু, ক্ষেতের ফসল এমনকি চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর জাহাজ এবং বিমান বাহিনীর বিমান পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ তখন বিরোধী দলে থাকলেও সে সময় দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ত্রাণ নিয়ে ছুটে যায়। পরবর্তীতে সরকারে এসে সেই ঘুর্ণি দুর্গতদের জন্য খুরুশকুল আশ্রয়ন প্রকল্প তৈরী করে তাদের পুনর্বাসনসহ সেই সময় কুতুবদিয়া থেকে ছোট্ট একটি ছেলেকে ঢাকায় এনে পুনর্বাসন করার একটি ঘটনাও অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন। মাতা-পিতাসহ সর্বস্ব হারানো সেই ছেলেটিকে ট্রমা সেন্টার থেকে চিকিৎসা করিয়ে নিজের কাছে রেখে দেন এবং এক সময় বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টে চাকরি দেন। পরবর্তীতে বেশ কয়েক বছর পর ছেলেটি আনোয়ারায় তার ভাইয়ের পরিবারের সন্ধান পায়।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় অনন্য কৃতিত্বের দাবিদার স্বেচ্ছাসেবকদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। ৮৩ জন স্বেচছাসেবককে ১০ হাজার টাকা, সনদ এবং মেডেল প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী ৮৩ জনের মধ্যে নির্বাচিত দু’জন জয়শ্রী রানী দাস এবং মো. জসিম উদ্দিনের হাতে পদক তুলে দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা কথা মনে রাখতে হবে আমাদের দেশের ভৌগলিক অবস্থানের কথা চিন্তা করে আমাদের নিজেদের ব্যবস্থাটা (দুর্যোগ মোকাবিলায়) নিজেদেরই করে নিতে হবে। কাজেই উপকূলীয় অঞ্চলে বৃক্ষায়ণের মাধ্যমে যতবেশি আপনারা একে সবুজে আচ্ছাদিত করতে পারবেন তত বেশি আমরা আমাদের দেশকে বাঁচাতে পারবো। এই বদ্বীপে আগামীর প্রজন্ম যেন স্ন্দুরভাবে বসবাস করতে পারে সেজন্য সরকার শতবর্ষ মেয়াদি ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ প্রণয়ন করেছে। আরও কিছু পরিকল্পনাও আমরা গ্রহণ করেছি অর্থাৎ যেকোন দুর্যোগ থেকে আমাদের দেশটাকে রক্ষার ব্যাপারে আমরা সবসময়ই সচেতন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব-দ্বীপ পরিকল্পনায় সারাদেশকে দুর্যোগের মাত্রার ওপর ভিত্তি করে একে ৬টি দুর্যোগ হটস্পটে বিভক্ত করা হয়েছে। এছাড়া, দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস, দুর্যোগের সাড়াদান প্রস্তুতি ও দুর্যোগ পরবর্তী পুনরুদ্ধার ব্যবস্থা উন্নয়নে ২০২১-২০২৫ সাল মেয়াদের জন্য জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে।
আজকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ বিশ্বে একটি অবস্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছে। যতই দুর্যোগ আসুক আমরা সেটা মোকাবিলায় সক্ষম, আমরা সেটা প্রমাণ করেছি। এটা অব্যাহত রাখতে হবে।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর আমরা দুর্যোগ বিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলী-১৯৯৭ প্রণয়ন করেছিলাম। পরবর্তীতে আমরাই আবার ২০১০ সালে এটি হালনাগাদ ও জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিল গঠন করি। ২০১২ সালে আমাদের সরকার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন প্রণয়ন করে। এই আইনের আওতায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর গঠন করা হয়েছে, যা দুর্যোগ মোকাবেলা, ঝুঁকি হ্রাস ও ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। আমাদের সরকার পূর্বের মুজিব কিল্লাসমূহ সংস্কারসহ নতুন করে আরও ৩৭৮টি মুজিব কিল্লা নির্মাণ করছে।
প্রধানমন্ত্রী বললেন, পাশাপাশি দেশের ১৩টি উপকূলীয় জেলায় স্যাটেলাইট টেলিফোনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দুর্যোগের আগাম সতর্কবার্তা ও দৈনন্দিন আবহাওয়া বার্তা জানতে মোবাইলে ১০৯০ নম্বরে টোল ফ্রি সার্ভিস চালু করা হয়েছে। দুর্যোগ প্রতিরোধে ঢাকায় গ্লোবাল এডাপটেশন সেন্টারের কার্যালয় স্থাপন এবং দুর্যোগ-পরবর্তী ত্রাণ কার্যক্রমের পরিবর্তে তাঁর সরকারের টেকসই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নীতি গ্রহণ করেছে। দুর্যোগে আমরা ক্ষয়ক্ষতি কমাতে প্রশমন কর্মসূচির ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছি। ঘূর্ণিঝড় ব্যবস্থাপনায় সিপিপিসহ আমাদের যেমন প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো রয়েছে তেমনি বন্যা ও ভূমিকম্প ব্যবস্থাপনায় প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি আমরা মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা- দশক ২০৩০ এর কার্যক্রম শুরু করেছি।
শেখ হাসিনা বিএনপি’র অগ্নি সন্ত্রাসের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, আমাদের বাংলাদেশটা একটা অদ্ভুত দেশ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন মোকাবেলা করতে হয় আবার অগ্নিসন্ত্রাসের মতো দুর্যোগও আমাদের মোকাবেলা করতে হয়। যেটা মানুষ সৃষ্ট। চলন্ত গাড়িতে আগুন, বাসে আগুন, লঞ্চে আগুন। এটাই হলো আমাদের দুর্ভাগ্য। আর জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকির ক্ষেত্রে আমাদের কোন ভূমিকা না থাকলেও আমরা এটার শিকার। আমাদের এটাই দাবি ছিল, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যেসব দেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এদের সব রকমের সহযোগিতা তাদের দেয়ার কথা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো আমরা তো অনেক প্রতিশ্রুতি পাই কিন্তু বাস্তবে কতটুকু সহযোগিতা পাওয়া যায়! তারপরও আমি বলবো, প্যারিস চুক্তি হওয়ার ফলে একটা আশার প্রদীপ জ্বলেছে। পাশাপাশি গ্লাসগোতেও কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ভূমিকম্প ঝুঁকি প্রশমনে ঘরবাড়ি ও অট্টালিকা নির্মাণে অবশ্যই বিল্ডিং কোড ও আইন মানার এবং এবং অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা রাখার কথা স্মরণ করিয়ে দেন।
তিনি বলেন, যে কোনো মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ আর প্রাকৃতিক দুর্যোগই মোকাবেলা করেই বাংলাদেশ তাঁর অভীষ্ট লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে এবং জাতির পিতার পদাংক অনুসরণ করেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আর একদিকে করোনা তারওপর রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ এবং স্যাংশন-এসব মোকাবেলা করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হচ্ছে।
বিপ্লব আহসান
অন্যরা যা পড়ছেন
শিশুকে ধর্ষণ-হত্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে অশ্রুসিক্ত র্যাব কর্মকর্তা
বিএনপি কখনো পরাজিত হবে না : ফখরুল
রাজধানীর নিকুঞ্জে আবাসিক ভবনে বিস্ফোরণ, আহত ১
এক সপ্তাহে হিটস্ট্রোকে ১০ জনের মৃত্যু
নিজ ঘর থেকে আড়াই বছরের শিশুর দ্বিখণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার
কক্সবাজারে ১০ কেজি গাঁজাসহ যুবক গ্রেপ্তার
তিন ঘণ্টা পর সিলেটের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক
ঘুমন্ত হেলপারকে পুড়িয়ে হত্যা, ৩ বিএনপি কর্মী গ্রেপ্তার
ইউরোপে কঠোর হচ্ছে অভিবাসন নীতি, যা জানালো ঢাকার ইইউ প্রধান
জাতীয়
জনগণ যতক্ষণ চাইবে ততক্ষণ ক্ষমতায় থাকব : প্রধানমন্ত্রী
Published
13 mins agoon
মে ২, ২০২৪By
জাকির হোসাইননির্বাচন নিয়ে অনেক কিছু হয়েছে, যাতে নির্বাচনটা না হয়। আমার শক্তি দেশের জনগণ। জনগণের শক্তির ওপর আমি সবসময় বিশ্বাস করেছি এবং আমি এটাও বলতে চাই, জনগণ যতক্ষণ চাইবে ততক্ষণ ক্ষমতায় থাকব। কারণ আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে এসেছি। বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ (বৃহস্পতিবার) বেলা সাড়ে ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে থাইল্যান্ড সফরের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ কোনো অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা ভোটের অধিকার হরণ করেছিল, তারাই এখন ভোটের অধিকারের কথা বেশি বলে। অথচ আমরাই দেশের মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছি।’
তিনি বলেন, অতিবাম-অতিডান মিলে সরকার উৎখাতের চেষ্টা করলেও জনগণের সাড়া পাচ্ছে না
প্রধানমন্ত্রী বলেন, থাইল্যান্ড চাইলে আমাদের দীর্ঘ ৮০ মাইল সমুদ্র সৈকতে জায়গা দেবো। কারণ থাইল্যান্ড পর্যটনের দিক থেকে অনেক অগ্রগামী। সে অভিজ্ঞতাটাও আমরা নিতে পারি। এজন্য তারা আমাদের বালুময় সমুদ্র সৈকতে বিনিয়োগ করতে চাইলে তাদের জায়গা দেওয়া হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, এ সফরের ফলে থাইল্যান্ডের কাছ থেকে সহযোগিতা পাওয়ার এবং সার্বিক উন্নয়নের একটা নতুন দুয়ার খুলে গেল। সেখানে একটা ভালো সুযোগ সৃষ্টি হলো। আপনারা জানেন যে, আমাদের দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা, যোগাযোগ, মতবিনিময় এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের ওপর গুরুত্ব দিয়ে থাকি। কারণ, সার্বিকভাবে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য এই বন্ধনটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের মামলায় এ রায় দেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২ মে) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক সৈয়দ আরাফাত হোসেনের আদালতে এ মামলায় অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানির জন্য ধার্য ছিল। এ দিন ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ অন্যান্য আসামিরা আদালতে হাজিরা দেন। আসামিদের পক্ষে আইনজীবীরা পূর্বশর্তে জামিনের আবেদন করেন। অবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। একইসঙ্গে আগামী ২ জুন পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন।
এর আগে, গেলো ২ এপ্রিল ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেন ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আস সামছ জগলুল হোসেন। তিনি পরবর্তী বিচারের জন্য ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এ মামলাটি বদলির আদেশ দেন।
চার্জশিটভুক্ত ১৪ আসামি হলেন, গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম, পরিচালক ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক পারভীন মাহমুদ, নাজনীন সুলতানা, মো. শাহজাহান, নূরজাহান বেগম ও পরিচালক এস. এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী, অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ আলী, অ্যাডভোকেট জাফরুল হাসান শরীফ, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান, শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক কামরুল হাসান ও প্রতিনিধি মো. মাইনুল ইসলাম।
এর আগে, গেলো ১ ফেব্রুয়ারি ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান।
সূত্রে জানা যায়, দুদকের অনুমোদিত চার্জশিটে আসামি ছিল ১৩ জন। নতুন করে একজন আসামি যুক্ত হয়েছে। তিনি হলেন গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক কামরুল হাসান।
গেলো বছরের ৩০ মে গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক। সংস্থার উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল ইসলামসহ বোর্ডের সদস্যদের উপস্থিতিতে ২০২২ সালের ৯ মে অনুষ্ঠিত ১০৮তম বোর্ডের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ঢাকা ব্যাংকের গুলশান শাখায় হিসাব খোলা হয়। গ্রামীণ টেলিকমের কর্মচারীদের পাওনা লভ্যাংশ বিতরণের জন্য গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন এবং গ্রামীণ টেলিকমের সঙ্গে সেটেলমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্ট চুক্তি হয় ওই বছরের ২৭ এপ্রিল।
গ্রামীণ টেলিকমের বোর্ড সভার হিসাব খোলার সিদ্ধান্ত ৯ মে হলেও হিসাব খোলা হয় একদিন আগে ৮ মে। সেটেলমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্টেও ৮ মে ব্যাংক হিসাব দেখানো আছে, যা বাস্তবে অসম্ভব। এরকম ভুয়া সেটেলমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্টের শর্ত অনুযায়ী ও ১০৮তম বোর্ডের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২০২২ সালের ১০ মে গ্রামীণ টেলিকমের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের মিরপুর শাখা থেকে ঢাকা ব্যাংকের গুলশান শাখায় ৪৩৭ কোটি ১ লাখ ১২ হাজার ৬২১ টাকা স্থানান্তর করা হয়।
পরবর্তী সময়ে ২২ জুন অনুষ্ঠিত গ্রামীণ টেলিকমের ১০৯তম বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অ্যাডভোকেট ফি হিসেবে অতিরিক্ত ১ কোটি ৬৩ লাখ ৯১ হাজার ৩৮৯ টাকা প্রদানের বিষয়টি অনুমোদন দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, ঢাকা ব্যাংকের গুলশান শাখার হিসাব থেকে গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন নামীয় ডাচ-বাংলা ব্যাংকের লোকাল অফিসের হিসাব থেকে তিন দফায় মোট ২৬ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা স্থানান্তর করা হয়।
কিন্তু কর্মচারীদের লভ্যাংশ বিতরণের আগেই তাদের প্রাপ্য অর্থ তাদের না জানিয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে ২০২২ সালের মে ও জুন মাসের বিভিন্ন সময়ে সিবিএ নেতা মো. কামরুজ্জামানের ডাচ-বাংলা ব্যাংকের মিরপুর শাখার হিসাবে মোট ৩ কোটি টাকা, সিবিএ নেতা মাইনুল ইসলামের হিসাবে ৩ কোটি ও সিবিএ নেতা ফিরোজ মাহমুদ হাসানের ডাচ-বাংলা ব্যাংক মিরপুর শাখার হিসাবে ৩ কোটি টাকা স্থানান্তর করা হয়।
একইভাবে অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ আলীর কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলনের ধানমন্ডি শাখার হিসাবে ৪ কোটি টাকা ও দ্য সিটি ব্যাংকের গুলশান শাখার হিসাবে ৫ কোটি টাকা এবং অ্যাডভোকেট জাফরুল হাসান শরীফ ও অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ আলীর স্ট্যান্ডার্ড টাচার্ড ব্যাংকের গুলশান নর্থ শাখায় যৌথ হিসাবে ৬ কোটি স্থানান্তর করা হয়, যা তাদের প্রাপ্য ছিল না।
দুদকের রেকর্ডপত্র অনুযায়ী, অ্যাডভোকেট ফি হিসেবে প্রকৃতপক্ষে হস্তান্তরিত হয়েছে মাত্র ১ কোটি টাকা। বাকি ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বোর্ড সদস্যদের সহায়তায় গ্রামীণ টেলিকমের সিবিএ নেতা এবং অ্যাডভোকেটসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অসৎ উদ্দেশ্যে সেটেলমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্টের শর্ত লঙ্ঘন করে জালিয়াতির আশ্রয়ে গ্রামীণ টেলিকম থেকে ওই অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। যা দণ্ডবিধি ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপ-মহাপরিদর্শক গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ সংবলিত একটি প্রতিবেদন দুদকে পাঠানো হয়। ওই প্রতিবেদনের সূত্র ধরে ২০২২ সালের ২৮ জুলাই অনুসন্ধান শুরু।
অভিযোগগুলো ছিল— অনিয়মের মাধ্যমে শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে বণ্টনের জন্য সংরক্ষিত লভ্যাংশের ৫ শতাংশ অর্থ লোপাট, শ্রমিক-কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধকালে অবৈধভাবে অ্যাডভোকেট ফি ও অন্যান্য ফির নামে ৬ শতাংশ অর্থ কর্তন, শ্রমিক কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলে বরাদ্দ করা সুদসহ ৪৫ কোটি ৫২ লাখ ১৩ হাজার ৬৪৩ টাকা বিতরণ না করে আত্মসাৎ। এছাড়া কোম্পানি থেকে ২ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা মানি লন্ডারিংয়ের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরের মাধ্যমে আত্মসাৎ।
জাতীয়
থাইল্যান্ড সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের পূর্ণ বিবরণ
Published
24 mins agoon
মে ২, ২০২৪By
জাকির হোসাইনবিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,
ও সহকর্মীবৃন্দ।
আসসালামু আলাইকুম! শুভ সকাল!
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন এর আমন্ত্রণে দ্বিপাক্ষিক সফরে এবং ইউএন-এসক্যাপ এর ৮০তম অধিবেশনে যোগদানের জন্য আমি গত ২৪ থেকে ২৯ এপ্রিল ২০২৪ থাইল্যান্ড সফর করি। কয়েকজন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপদেষ্টা এবং ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ আমার সফরসঙ্গী ছিলেন।
২৪ এপ্রিল ২০২৪ ব্যাংককে পৌঁছালে বিমানবন্দরে আমাকে লালগালিচা সংবর্ধনা, গার্ড অব অনার ও গান স্যালুটের মাধ্যমে অভ্যর্থনা জানানো হয়।
গত ২২ হতে ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ব্যাংককে ইউএন-এসক্যাপ এর ৮০তম বার্ষিক অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদানের জন্য সংস্থাটির এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। দেশে ব্যস্ত থাকায় আমি তাতে অংশ নিতে পারিনি। তবে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অধিবেশনের মূল প্রতিপাদ্য ‘এশীয়-প্রশান্ত মহাসারীয় অঞ্চলে টেকসই উন্নয়নে ডিজিটাল উদ্ভাবনা জোরদার’ বিষয়ে আমার পূর্বধারণকৃত একটি ভিডিও বার্তা প্রদর্শন করা হয়।
২৫ এপ্রিল সকালে ইউএন-এসক্যাপের এর একটি অধিবেশনে আমি এশীয় প্রশান্ত অঞ্চলে সহযোগিতা জোরদার করার মধ্য দিয়ে জাতিসংঘের এজেন্ডা ২০৩০ ও টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জন বিষয়ে বক্তব্য প্রদান করি। আমি বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন অভিজ্ঞতা তুলে ধরার পাশাপাশি ইউএন-এসক্যাপ এর মাধ্যমে আমাদের নিজস্ব উদ্ভাবিত ও বাস্তবায়িত বিভিন্ন উন্নয়ন মডেল এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশের সঙ্গে বিনিময় করার বিষয়ে আমাদের আগ্রহ ব্যক্ত করি।
আমি সকল ধরনের আগ্রাসন ও নৃশংসতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য এবং যুদ্ধকে ‘না’ বলার জন্য আবারও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাই।
আমি ফিলিস্তিনে অব্যাহত গণহত্যা; মিয়ানমারে চলমান সংঘাত, ও রোহিঙ্গা সমস্যা নিরসনে এশিয়া-প্রশান্ত অঞ্চলসহ বিশ্ব সম্প্রদায়কে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানাই।
একইদিন, জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ও ইউএন-এসক্যাপ এর এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি মিজ্ আরমিদা সালসিয়ান আলিসজাহবানা আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। আলাপকালে, আমি দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে পারস্পারিক সহযোগিতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করি।
ইউএন-এসক্যাপ এর ৮০তম বার্ষিক অধিবেশনের বিভিন্ন সেশনে মাননীয় অর্থমন্ত্রী এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বক্তব্য প্রদান করেন।
সম্মেলনস্থলে আইসিটি বিভাগের আয়োজনে একটি সাইড ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয় এবং ‘ডিজিটাল টু স্মার্ট বাংলাদেশ-২০৪১’ শীর্ষক প্যাভিলিয়ন স্থাপন করা হয়। আমি প্যাভিলিয়নটি ঘুরে দেখি।
একইদিন বিকেলে আমি থাইল্যান্ডের রাজপ্রাসাদে মহামহিম রাজা মহা ভাজিরালংর্কন ফ্রা ভাজিরা ক্লাওচা উহুয়া এবং মহামহিমা রাণী সুধিদা বজ্রসুধা বিমলা লক্ষণ-এর সঙ্গে দেখা করি।
এ সময় আমি থাইল্যান্ডের দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্বের জন্য রাজা ও রাণীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই এবং দুই দেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করতে একসাথে কাজ করবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করি।
সফরের তৃতীয় দিন ২৬ এপ্রিল গভর্নমেন্ট হাউজে পৌঁছিলে আমাকে রাষ্ট্রীয় গার্ড অব অনারের মাধ্যমে থাই প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে পুনরায় থাইল্যান্ডে স্বাগত জানান।
পরে গভর্নমেন্ট হাউসে আমি থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন এর সঙ্গে একান্ত বৈঠকে অংশগ্রহণ করি। বৈঠকে অন্যান্য দ্বিপাক্ষিক বিষয়ের পাশাপাশি আমি জোরপূর্বক বাস্তচ্যুত মায়ানমারের নাগরিকদের (রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর) দ্রুত তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের জন্য থাইল্যান্ডের সহায়তা কামনা করি।
একান্ত বৈঠকে শেষে আমার এবং থাইল্যান্ডের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দু’দেশের প্রতিনিধিদলের অংশগ্রহণে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এই বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দীর্ঘস্থায়ী দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অধিকতর উন্নয়নকল্পে আমরা গঠনমূলক আলোচনা করি। এ সময় আমি ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি জ্ঞান-ভিত্তিক, ডিজিটালাইজড এবং জলবায়ু সহনশীল দেশে রূপান্তর এবং বাংলাদেশকে একটি স্মার্ট দেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে মূল্যবান অংশীদার হিসেবে থাইল্যান্ডের সহযোগিতা কামনা করি।
বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি’-এর পর্যালোচনার পাশাপাশি অন্যান্য অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা হয়। উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলোর মধ্যে ছিল বিনিয়োগ, জনগণের মধ্যে যোগাযোগ, সাংস্কৃতিক বিনিময়, পর্যটন সহযোগিতা, জালানি নিরাপত্তা, কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, স্থল এবং সমুদ্র সংযোগ, উন্নয়ন সহযোগিতা এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা।
এ সময় আমি দুই দেশের বাণিজ্য ভারসাম্য রক্ষার জন্য বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণকে বিশেষ করে, আমাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাই-টেক পার্কে বিনিয়োগে উৎসাহিত করার জন্য থাই প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করি।
থাই প্রধানমন্ত্রীকে তৈরি পোষাকসহ কিছু বাংলাদেশী পণ্যের একটি যুক্তিসঙ্গত সময়ের জন্য শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা প্রদানের বিষয়টি বিবেচনা করার অনুরোধ জানিয়েছি।
কৃষি উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে কৃষিখাতে পারস্পরিক সহযোগতিা বৃদ্ধির মাধ্যমে আমরা থাইল্যান্ডের অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা কাজে লাগিয়ে খাদ্য নিরাপত্তা সুদৃঢ় করতে পারি। এজন্য থাইল্যান্ডের সঙ্গে আমাদের সহযোগতিা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা করেছি।
আমরা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির ব্যাপারে আলোচনা করি। থাইল্যা-কে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে বিনিয়োগেরও আহ্বান জানাই।
নিরবচ্ছিন্ন আঞ্চলিক যোগাযোগের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে থাইল্যান্ডের রানং বন্দর এবং চট্টগ্রাম বন্দরের মধ্যে সরাসরি কোস্টাল শিপিং দ্রুত চালু করার মাধ্যমে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করতে আমরা একমত পোষণ করি। এ ছাড়াও, আঞ্চলিক সহযোগিতা সুদৃঢ়করণে ‘ভারত-মিয়ারমার-থাইল্যান্ড’ তে বাংলাদেশের যোগদানের বিষয়ে আমাদের প্রত্যাশা পুনর্ব্যক্ত করি।
বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড উভয়ই বিমসটেকের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। আমি ও থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী একমত পোষণ করি যে, বিমসটেক এ অঞ্চলের প্রায় ১৮০ কোটি মানুষের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হতে পারে। আমি থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীকে বিমসটেকের বর্তমান সভাপতি হিসেবে অভিনন্দন জানাই এবং তাঁর নেতৃত্বে থাইল্যান্ড শীঘ্রই বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে সফলভাবে আয়োজন করবে মর্মে শুভকামনা জানাই।
ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশ আসিয়ানের প্রতিবেশী। দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার মধ্যে সংযোগস্থলে অবস্থিত বাংলাদেশের আসিয়ানের ‘সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার’ মর্যাদা চলতি বছরের মধ্যে প্রাপ্তির জন্য আবেদনের বিষয়ে থ্যাইল্যান্ড সরকারের নিকট আবারও অনুরোধ জানিয়েছি।
দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে, দুই দেশের সহযোগিতার ক্ষেত্রকে আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক ও একটি ‘আগ্রহ পত্র’ লেটার অব ইনটেনশন) সই হয়েছে। সেগুলো হলো:
(ক) অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি সংক্রান্ত চুক্তি;
(খ) জ্বালানি সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতা স্মারক;
(গ) পর্যটন সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক;
(ঘ) শুল্ক সংক্রান্ত পারস্পরিক সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতা স্মারক; এবং
(ঙ) মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা শুরু করার জন্য একটি আগ্রহ পত্র
চুক্তি ও সমঝোতাসমূহ স্বাক্ষর শেষে আমি ও থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনেরন সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখি। সংবাদ সম্মেলন শেষে আমার সৌজন্যে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক আয়োজিত রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজে যোগদান করি। আমার ছোট বোন শেখ রেহানাও এতে অংশ নেয়।
থাইল্যান্ডে আমার সরকারি সফরটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। এটি আমাদের দুই দেশের মধ্যে ফলপ্রসু অংশীদারিত্বের একটি নতুন যুগের সূচনা করেছে।
আসিয়ানের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য রাষ্ট্র থাইল্যান্ডে বাংলাদেশের সরকার প্রধানের সরকারি সফর অত্যন্ত তাৎর্পযর্পূণ। সফরে দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধিসহ, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা শুরুর বিষয়ে অগ্রগতি, আন্তঃযোগাযোগ বৃদ্ধি প্রভৃতি দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক সুদৃঢ়করণে বিশেষ গুরুত্ব পালন করবে। ২০২৪ সালের মধ্যে বাংলাদেশের আসিয়ানের ‘সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার’-এর প্রার্থীতা লাভের জন্য এ সফর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ডের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অনুষ্ঠিত আলোচনা থাইল্যান্ডকে দ্বিপাক্ষিকভাবে এবং আঞ্চলিক জোট আসিয়ানে রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনে জোরালো অবস্থান নেওয়ায় সহায়তা করবে মর্মে আমি আশাবাদী।
সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বার্থ সুরক্ষা এবং আঞ্চলিক সম্পৃক্ততা বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশের বিশেষ প্রয়াস হিসেবে এ সফরটি সফল ও ফলপ্রসূ হয়েছে বলে আমি মনে করি।
সবাইকে ধন্যবাদ।
খোদা হাফেজ।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।
জাতীয়
জনগণ যতক্ষণ চাইবে ততক্ষণ ক্ষমতায় থাকব : প্রধানমন্ত্রী
নির্বাচন নিয়ে অনেক কিছু হয়েছে, যাতে নির্বাচনটা না হয়। আমার শক্তি দেশের জনগণ। জনগণের শক্তির ওপর আমি সবসময় বিশ্বাস করেছি...
ড. ইউনূসসহ ১৪ আসামির জামিন মঞ্জুর
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের...
থাইল্যান্ড সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের পূর্ণ বিবরণ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ, ও সহকর্মীবৃন্দ। আসসালামু আলাইকুম! শুভ সকাল! থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন এর আমন্ত্রণে দ্বিপাক্ষিক সফরে এবং...
থাইল্যান্ডে সরকারি সফর মাইলফলক হয়ে থাকবে : প্রধানমন্ত্রী
থাইল্যান্ড চাইলে সমুদ্র সৈকতে পর্যটনের জন্য জয়গা দেয়া হবে। অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ হাইটেক পার্কে থাইল্যান্ডকে বিনিয়োগের আহ্বান জানানো হয়েছে। থাইল্যান্ডে সরকারি...
ইসির সতর্কতামূলক চিঠি পেয়ে যা বললেন রেলমন্ত্রী পুত্র
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও রেলমন্ত্রীর ছেলে আশিক মাহমুদ মিতুলকে সতর্কতামূলক চিঠি...
মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে মৃত্যু সনদ জালিয়াতির মামলা
জাল মৃত্যু সনদ দেয়ার অভিযোগে মিরপুর মডেল থানায় জাল জালিয়াতির একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে মানবতার সেবক হিসেবে পরিচিত ‘চাইল্ড...
ইতালির ভিসা পেতে দেরির কারণ জানাল দেশটির দূতাবাস
বাংলাদেশে ইতালির ভিসা পেতে দেরির কারণ ব্যাখ্যা করেছে দেশটির দূতাবাস। সেই সঙ্গে ঢাকায় ইতালির ভিসা প্রক্রিয়াকরণের জন্য দূতাবাস ও আবেদন...
আজ বিকেলে বসছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন
আজ বৃহস্পতিবার (২ মে) শুরু হচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন। ঢাকার শেরে বাংলা নগরে জাতীয় সংসদ ভবনের সংসদ কক্ষে...
খালেদা জিয়াকে ফের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আবারও রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার (১ মে) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিএনপির ভাইস...
‘মিল্টন সমাদ্দারকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে’
‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে অজস্র অভিযোগ রয়েছে।এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে রিমান্ডে...
জনগণ যতক্ষণ চাইবে ততক্ষণ ক্ষমতায় থাকব : প্রধানমন্ত্রী
ড. ইউনূসসহ ১৪ আসামির জামিন মঞ্জুর
থাইল্যান্ড সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের পূর্ণ বিবরণ
কর কমিশনারের কার্যালয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
কলম্বিয়ায় হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত, ৯ সেনা নিহত
থাইল্যান্ডে সরকারি সফর মাইলফলক হয়ে থাকবে : প্রধানমন্ত্রী
ইসির সতর্কতামূলক চিঠি পেয়ে যা বললেন রেলমন্ত্রী পুত্র
দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রশান্তির বৃষ্টি
তিউনিসিয়ায় নৌকাডুবিতে নিহত ৮ জনের মরদেহ দেশে আসছে আজ
রাজবাড়ীতে ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে রেল যোগাযোগ বন্ধ
৯ দিনে একে একে মারা গেলেন ৩ ভাই
এক মিনিটের জন্য বিসিএসের স্বপ্ন চুরমার!
রাতের মধ্যে যেসব জেলায় ঝোড়ো হাওয়াসহ হতে পারে বৃষ্টি
৭৫ নেতাকে বহিষ্কার করলো বিএনপি
সম্পত্তির জন্য ঘুষি মারতে মারতে বৃদ্ধ বাবাকে খুন ছেলের! ভাইরাল ভিডিও
গরমে অসুস্থ হয়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু
বাংলাদেশ-চীনের সামরিক মহড়া, যা জানালো ভারত
রাত ৮টার পর মার্কেট-দোকান বন্ধে মাইকিং
টয়লেটে ৯ মাস ধরে আটক থাকা যুবক উদ্ধার
বিয়েতে পাওয়া স্ত্রীর উপহারে স্বামীর অধিকার নেই
সামনে ‘যুদ্ধবিরোধী’ কুমির, আটকে গেলো মার্কিন বিমান (ভিডিও)
বেনজীরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে যা বললেন ব্যারিস্টার সুমন
গায়ের চাদর না পুড়িয়ে বউদের ভারতীয় শাড়ি পোড়ান: প্রধানমন্ত্রী
ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ব্রাজিল কোচ জানালেন এটা মাত্র শুরু
জিলাপির প্যাঁচে লুকিয়ে আছে যে রহস্য!
বাজারে লেবুর সরবরাহ বেশি, তবুও দাম চড়া
রাজধানীতে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার কিশোরীর ঠিকানা খুঁজছে পুলিশ
নীল দুনিয়ায় অভিনেত্রী সোফিয়ার রহস্যজনক মৃত্যু
জামালকে ঠিকঠাক বেতন দেয়নি আর্জেন্টাইন ক্লাব
রণবীরের ‘অ্যানিম্যাল’ দেখে শখ, মাইনাস ২৫ ডিগ্রিতে বসলো বিয়ের আসর
সর্বাধিক পঠিত
- দুর্ঘটনা6 days ago
৯ দিনে একে একে মারা গেলেন ৩ ভাই
- বাংলাদেশ6 days ago
এক মিনিটের জন্য বিসিএসের স্বপ্ন চুরমার!
- আবহাওয়া5 days ago
রাতের মধ্যে যেসব জেলায় ঝোড়ো হাওয়াসহ হতে পারে বৃষ্টি
- বাংলাদেশ6 days ago
৭৫ নেতাকে বহিষ্কার করলো বিএনপি
- টুকিটাকি3 days ago
সম্পত্তির জন্য ঘুষি মারতে মারতে বৃদ্ধ বাবাকে খুন ছেলের! ভাইরাল ভিডিও
- খুলনা4 days ago
গরমে অসুস্থ হয়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু
- আন্তর্জাতিক6 days ago
বাংলাদেশ-চীনের সামরিক মহড়া, যা জানালো ভারত
- ঢাকা7 days ago
রাত ৮টার পর মার্কেট-দোকান বন্ধে মাইকিং